• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০৯:৫৩ পিএম

সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়া জানুয়ারিতে

দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে এখনও ধাঁধায় ইসি

দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে এখনও ধাঁধায় ইসি
ইসি ভবন

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে আরেক দফা ‘মধু’র বিড়ম্বনা বা সমস্যায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৩ নভেম্বর (রোববার) কমিশন বৈঠক শেষে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর জানিয়েছিলেন, ১৮ নভেম্বরের পর যে কোনও দিন তফসিল আর মধ্য জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দুই সিটির ভোট। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি শেষ করে আনার পরও মধ্য জানুয়ারিতে ভোট করতে পারছে না ইসি। আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে ইসি জানুয়ারির একেবারে শেষ দিকে ভোট করার পরিকল্পনা সাজাচ্ছে।

ইসি সূত্র জানায়, মধ্য জানুয়ারি থেকে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে একেবারে শেষ দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ‘টেকনিক্যাল’ কারণে। তবে সেই ‘টেকনিক্যাল’ কারণটা খোলাসা করেননি কেউ।

ইসি সংশ্লিষ্টরা ‘টেকনিক্যাল’ কারণ খোলাসা না করলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, মূলত জানুয়ারিজুড়ে সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়া থাকায় দুই সিটির নির্বাচন মধ্য জানুয়ারি থেকে পিছিয়ে শেষ দিকে নেয়া হচ্ছে। কারণ ইসি আগেই জানিয়েছিল, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন সম্পন্ন হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে। আর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় সর্বত্রভাবে ইসি সহায়তা নেয় সেনাবাহিনীর।

ইসি সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জানান, শীতকালীন মহড়া চলাকালে নির্বাচন হলে সেনাবাহিনীর সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে। মহড়া শেষ হবে জানুয়ারির শেষ দিকে। দুই সিটিতে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২ হাজার ৬০০টির মতো। এক্ষেত্রে প্রতিকেন্দ্রে একজন করে ইভিএম পরিচালনা টিমের সদস্য কাজ করলেও প্রয়োজন ২ হাজার ৬০০ জন। নির্বাচন কমিশনের এ লোকবল নেই। মহড়ার সময় আবার সশস্ত্র বাহিনীও এ লোকবল দেবে না। এ অবস্থায় জানুয়ারির শেষ দিক ছাড়া নির্বাচনের চিন্তা করার উপায় নেই কমিশনের। কোনও কারণে জানুয়ারি পেরিয়ে গেলেও ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষার কারণে ভোটগ্রহণে সমস্যা হবে। সে ক্ষেত্রে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইসিকে মার্চের কথা ভাবতে হবে।

এদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন জানুয়ারিতে না করতে দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ ৪৮ জন কাউন্সিলর ইসিতে আবেদন করেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, কাউন্সিলরদের ওই তৎপরতায় ঝুঁলে যেতে পারে ঢাকা সিটির নির্বাচন।

এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর দৈনিক জাগরণকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে আইনি কোনও ধরনের জটিলতা নেই। কাউন্সিলরদের আবেদন কমিশনের নজরে আনা হয়েছে।

‘দুই সিটির ভোট কেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রস্তুত। প্রস্তুত ভোটার তালিকাও। দুই সিটিতে ভোটকেন্দ্র প্রায় আড়াই হাজার। ভোটকক্ষ  প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার

..........................

কমিশন জানায়, পরিষদ ভেঙে গেলে নির্বাচিতদের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। পরিষদের মেয়াদ শেষের পূর্বতন ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনি বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। এ অনুযায়ী এরই মধ্যে ঢাকার দুই সিটির ভোটের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর নির্বাচন উপযোগী হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। আর গত ১৮ নভেম্বর নির্বাচন ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে। স্থানীয় সরকার থেকে চিঠি পাওয়ার পর ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কমিশন।

প্রথমত কমিশন চিন্তা ছিল ডিসেম্বরের শুরুতে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে ঢাকার দুই সিটির তফসিল ঘোষণার। মধ্য জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন শেষ করার। কিন্তু নানা দিক বিবেচনা করে এখন ২৩, ২৬ ও ৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নির্বাচনি প্রস্তুতি চলছে। এক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৪৫ দিন হাতে রেখে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোট করা হবে।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একসঙ্গে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা ওই বছরের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৭ মে ও চট্টগ্রাম সিটিতে প্রথম সভা ‍অনুষ্ঠিত হয় ৬ আগস্ট। সেই হিসেবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৩ মে, দক্ষিণে বছরের ১৬ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষ হবে।

ভোট কেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রস্তুত

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, এরই মধ্যে দুই সিটির ভোট কেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ভোটার তালিকাও। আর ইসি সচিবালয় দুই সিটিতে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা বলেছেন, দুই সিটিতে প্রায় আড়াই হাজার ভোট কেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ  প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার।

ইভিএমের বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোটের জন্য প্রায় ৩০ হাজারের মতো ইভিএম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনি এলাকার ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডিও প্রস্তুত থাকছে।

এইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন