• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ১১:০৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ১১:০৮ এএম

কোথায় হারান সম্ভাবনাময় তারকারা?

কোথায় হারান সম্ভাবনাময় তারকারা?

দেশের ক্রিকেটে সম্ভাবনার মশাল জ্বালিয়ে ক্রিকেটারদের আগমনের তালিকাটা দীর্ঘ। শত আঁধারের ভীড়ে কেউ কেউ জানান দিয়েছিলেন, আলোর মশাল জ্বালাতে আসছেন তারা। তাতে অপেক্ষায় বসেছেন সবাই, উড়িয়েছেন প্রত্যাশার ফানুস। দিনশেষে বিনিময়ে পেয়েছেন কেবলই হতাশা। তা কাটাতে কেউ এসে যদি মাঝে মধ্যে বাড়িয়ে দেন নির্ভরতার হাত। ক'দিন বাদে তিনিও হারিয়ে যান হেলায়।

এভাবেই চলেছে, চলছে, হয়তো চলবেও। টেস্ট আঙিনায় কুড়ি বছর পার করেও তাই শুনতে হচ্ছে 'শিক্ষা'র তত্ত্ব। নতুন করে জেগে উঠার আশা। তাও হচ্ছে না। কদিন বাদেই টের পাওয়া যাচ্ছে এসব কেবলই দৃষ্টি এড়ানোর কৌশলী কথা-বার্তা। সেসবে বুদ যারা হন না তাদের হাপিত্যেশ ছুঁটে হরহামেশাই। কোথায় হারান আমাদের সম্ভাবনাময় তারকারা?

গত অর্ধযুগে বেশ ক'জন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারের আগমন ঘটেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটে। যাদের মধ্যে দুই জন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। বেশ কয়েক বার নিজেদের ব্যাটে প্রমান করেছেন হতে পারেন আগামীর ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে যে আফসোস, সেই তামিমের সঙ্গী। কিন্তু তা আর হলো কই!

জাতীয় দলের হয়ে দুই বিশ্বকাপ খেলেছেন সৌম্য এরপর তার বর্তমান ঠিকানা ইমার্জিং দলের হয়ে এসএ গেমস। প্রতিপক্ষের নাম শুনে যেখানে চমকে যান অনেকে। বলে উঠেন আরে, নেপাল-ভুটানও কী ক্রিকেট খেলে নাকি! খেলে। তাদের বিরুদ্ধে খেলতে দল পাঠায় না ভারত ও পাকিস্তান। আমাদের দলে থাকেন দুই বিশ্বকাপ খেলা সৌম্য সরকার। তা নিজের ফর্মের কারণেই। 

লিটন দাসকে ভাবা হয় এ যাবতকালে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। সে সামর্থ্যে তিনি প্রমান করেছেন কয়েক বার, দেখিয়েছেন প্রতিভার ঝলক। তার ব্যাটিং কে বোধ হয় বিশেষায়িত করার জন্য যথেষ্ট ইয়ান বিশাপের ওই বাক্যেটাই, 'লিটন দাস ইজ পেইন্টিং মোনালিসা, হিয়ার ইন টনটন টুডে'। কিন্তু তিনিই বা কী করলেন! 

প্রতিভার ঝলক দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাতীয় দলে পার করেছেন প্রায় অর্ধযুগ, এতদিনেও হতে পারেননি ধারাবাহিক। এতটুকু বুঝে উঠতে পারেননি প্রতিভা দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় ঠিকই, ম্যাচটা জিততে হলে প্রয়োজন ধারাবাহিকতার।

দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আফসোসের নামটা বোধ হয় হতে চলেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। মায়াবী কাটারের জাদুতে ব্যাটসম্যানদের স্টাম্প উপড়ে ফেলেছেন যিনি, তিনি এখন খুঁজে ফেরেন রান কম দেয়ার রাস্তা। তাতে ব্যর্থই হন বেশির ভাগ সময়। তাও উপযুক্ত বিকল্পের অভাবে খেলে যান ম্যাচের পর ম্যাচ।

তাসকিন আহমেদ সাম্প্রতিক সময়ে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি বুঝতে পেরেছেন আবেগের আসলে খাওয়া নেই। তার বয়স ফুরিয়ে যায়নি এখনো, অনেক দেয়ার আছে দেশকে। তবে তার এই উপলব্ধিটা যদি হতো খানিক আগে, আদতে উপকৃত হতো দেশের ক্রিকেটই।

সৌম্য-লিটন-মুস্তাফিজ-তাসকিনরা কেবল নিদর্শন মাত্র। দেশের প্রায় সব উঠতি তারকাদের চিত্রটাই এমন। যার পেছনে সবচেয়ে বড় সমস্যাটা মানসিকতায়। কেবল জাতীয় দলই যে গন্তব্য নয়, সেটা বুঝতে না পারায়। মাঠ ও মাঠের বাইরে নিজের জীবনে নিয়ন্ত্রণ এনে কীভাবে রাজত্ব করা যাবে পুরো বিশ্ব ক্রিকেটে, সে স্বপ্ন আছে ক'জনার? এমন প্রশ্ন ছুঁড়লে হয়তো বলে দেয়া যাবে হাতের কড় গুনে।

দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর বিপিএল। আসছে বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। শত প্রতিকূলতার ভীড়েও আশা নিয়ে অনেকে বসবেন নতুন তারকা দেখার অপেক্ষায়। সঙ্গে আরও একটা প্রার্থনা জুড়ে দেয়া যায়, এমনভাবে যেন তারকারা না হারায়।

এমএইচবি

আরও পড়ুন