• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০, ০৫:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০, ০৫:৩৯ পিএম

রাকিবুলের টিনের ছোট ঘরে নেই বিদ্যুতের আলো 

রাকিবুলের টিনের ছোট ঘরে নেই বিদ্যুতের আলো 
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের বাশাটি গ্রামে অবস্থিত রাকিবুল হাসানের টিনের ছোট ঘর। ফটো : দৈনিক জাগরণ

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য রাকিবুল হাসানের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুরে। জুনিয়র টাইগারদের বিশ্বকাপ জয় উপলক্ষে তার গ্রামে মিষ্টি বিতরণসহ বিভিন্নস্থানে আনন্দ মিছিল হয়। রাকিবুলকে ঘিরে এখন গ্রামের সর্বত্রই আলোচনার ঝড় বইছে।

ফুলপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে রূপসী ইউনিয়নের বাশাটি গ্রামের ছেলে রকিবুল হাসান। তার গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাকিবুল হাসানের টিনের ছোট্ট পুরানো বাড়ি। সেখানে আজও বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি। 

জন্মের পর থেকে রাকিবুল হাসান গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেননি। তার বাবা শহীদুল ইসলাম ঢাকায় থাকেন। তিনি পেশায় একজন গাড়ি চালক। রাকিবুল পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন। তবে বছরে বেশ কয়েকবার গ্রামে বেড়াতে আসতেন রাকিবুল। ওই সময় গ্রামের কিশোরদের সঙ্গে তিনি ঘুরে বেড়ান। রূপসী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেটও খেলেন। সেই বাড়িতে কেউ না থাকায় রাকিবুলের ফুপা কামাল হোসেন তার পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করেন। 

রাকিবুলের ফুপু রোখসানা খাতুন বলেন, ‘সে বেশি পড়তে চাইতো না। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট খেলতো। এ জন্য আমরা বিরক্ত থাকলেও আজ সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এখন আমরা খুবই আনন্দিত।’

গ্রামের বিভিন্ন বয়সী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাকিবুল যে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলছেন; এ খবর টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই গ্রামবাসী জানতেন। বিশেষ করে গ্রামের কিশোররা এসব খবর বেশি রাখেন। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর থেকেই গ্রামের মানুষ রূপসী বাজারে গিয়ে রাকিবুলের খেলা দেখেছেন। 

গ্রামের কিশোররা জানান, রাতে বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ হলেও খেলা দেখার জন্য পরিবারের অনুমতি নিয়ে রোববার রাতে রূপসী বাজারে বসেই খেলা দেখেছেন তারা। টানা উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব জয়ের শেষ রানটা আসে রাকিবুলের ব্যাট থেকে। এ আনন্দের ঘোর তাদের কাটছেই না। রাতেই গ্রামের মানুষ রাকিবুলের দলের জয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন। এক বছর আগে রূপসী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তারা রা কিবুলের খেলা দেখেছেন। 

বাশাটি গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আবদুল হামিদ জানান, গ্রামে এখন বোরো ধান রোপণের ভরা মৌসুম চলছে। মানুষের দম ফেলার সময় নেই। এমন সময়েও রাকিবুলের সাফল্যের খবরে গ্রামে গত সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা এসেছেন। এটি তাদের জন্য বড় আনন্দের বিষয়। 

আবদুল হামিদ বলেন, ‘খেলা এতো বুঝি না। তবে গ্রামে সাংবাদিক আসায় এতটুকু বুঝেছি যে, আমাদের গ্রামের ছেলে বড় কিছুই করেছে।’ 

গ্রামের মানুষের এ আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিতে চান রাকিবুল হাসানের বাবা শহীদুল ইসলাম। গ্রামের মানুষের বাঁধ ভাঙা আনন্দের খবর শুনে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ছেলে (রাকিবুল) দেশে আসলেই তাকে নিয়ে গ্রামে আসবো। গ্রামের মানুষদের সঙ্গে এ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবো।’ 

আরআইএস 
 

আরও পড়ুন