• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০১৯, ০৯:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৫, ২০১৯, ০৯:৫১ পিএম

ঔপনিবেশিকতা নাকি সার্বভৌমত্ব, কোন পথে হংকং

ঔপনিবেশিকতা নাকি সার্বভৌমত্ব, কোন পথে হংকং
হংকং বিক্ষোভের খণ্ডচিত্র নিয়ে কোলাজ

এশিয়ার দেশ গণচীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংজুড়ে যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে তা নিয়ে উৎকন্ঠিত সারাবিশ্ব। চীন সরকার ঘোষিত হংকং প্রত্যর্পণ আইনের প্রস্তাবিত বিলটি প্রত্যাখানের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই আন্দোলন এখন এ অঞ্চলের মানুষের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

দীর্ঘ ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এই আন্দোলনের পরিণতি কি হতে পারে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। 

জন্মলগ্ন থেকে ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে থাকা হংকং বার বার এমন আন্দোলন আর সংগ্রামে রক্তাক্ত হলেও তার প্রতিটিই ছিলো শুধু ঔপনিবেশিক প্রভুদের সঙ্গে আঞ্চলিক অধিকর্তাদের ‘বাণিজ্যিক বিরোধ’। যা এ অঞ্চলের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণে কোনও ভূমিকা রাখে নি।

এবারের প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে এ অঞ্চলের পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে পারে তা বুঝে নিতে এক নজরে দেখা নেয়া যাক হংকংয়ের ইতিহাস। জেনে নেয়া যাক- চীন কেন হংকংকে ব্রিটেনের কাছে ইজারা দিয়েছিল, কেনই বা আবার ব্রিটেন তা ফিরিয়ে দিয়েছিল এবং হংকং এর ভবিষ্যৎ কী?

হংকং একসময় ব্রিটেনের কলোনি ছিল। ৯৯ বছরের ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন চীনের কাছে হংকংকে ফিরিয়ে দেয় এবং সেই থেকে ৪২৬ বর্গমাইলের সুবাসিত বন্দরটি ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ অনুসারে চীনের অধীনেই রয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে প্রথমেই ফিরে যেতে হয় সেই খ্রিস্টপূর্ব ২৪৩ অব্দে। যখন কিং সাম্রাজ্যের সময়ে প্রথমবারের মতো হংকং চীনের অধীনে আসে। এর পরের ২ হাজার বছর জুড়ে হংকং চীনের অধীনেই থাকে। কিন্তু রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে বদলে যায় সকল হিসাব নিকাশ; হংকং পরিণত হয় ব্রিটিশ হংকংয়ে।

● বাণিজ্য অস্থিতিশীলতা এবং আফিম, রূপা ও চা এর জটিল বাণিজ্যিকরণ

১৯ শতকে ব্রিটেনের মানুষ প্রচণ্ড রকমের চা পাগল হয়ে ওঠে। আর তাদের প্রথম পছন্দ ছিল অবশ্যই চীনা চা। তাই ব্রিটিশ সরকার চীন থেকে চা আমদানি করে নিয়ে যেতে চায় এবং এর বিনিময়ে তারা চীনকে প্রস্তাব দেয় ব্রিটেনের কোনও পণ্য ক্রয় করতে। কিন্তু কিং সাম্রাজ্য কিংবা তার প্রজারা কেউই ব্রিটিশ উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না। তাই তারা ব্রিটিশদের কাছে দাবি করে চায়ের দাম সোনা বা রূপা দিয়ে চুকাতে। কিন্তু রানী ভিক্টোরিয়ার সরকারের এ দাবি মনঃপুত হয়নি। তারা কোনোভাবেই চায়নি সংরক্ষিত সোনা বা রূপা দিয়ে চা কিনতে। অপরদিকে লেনদেনের সময় চা আমদানি বাবদ প্রাপ্ত কর ছিল ব্রিটিশ অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। তাই ভিক্টোরিয়ার সরকার সিদ্ধান্ত নেয় জোরপূর্বক ব্রিটিশ উপনিবেশের অন্তর্ভুক্ত ভারত উপমহাদেশ থেকে আফিম নিয়ে চীনে রফতানি করতে। এভাবে তারা আফিমের বিনিময়ে চা কিনবে।

স্বাভাবিকভাবেই, চীনা সরকার বিদেশি শক্তি দ্বারা তাদের দেশে এই বিশাল পরিমাণ নেশাদ্রব্য আমদানির বিরোধিতা করে। সেই সময়ে বেশিরভাগ ব্রিটিশই আফিমকে ক্ষতিকর কিছু বলে গণ্য করত না। তাদের কাছে আফিম ছিল কেবলই একটি ওষুধ। কিন্তু চীনের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। এরই মধ্যেই তারা আফিম সঙ্কটে ভুগতে শুরু করে দিয়েছিল। তাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা তখন আফিমের নেশায় মত্ত থাকত।

ইংল্যান্ডে উইলিয়াম ইইয়ার্ট গ্ল্যাডস্টোনের মতো কিছু রাজনীতিবিদ অবশ্য ছিলেন যারা আফিমের ক্ষতিকর প্রভাব আঁচ করতে পেরেছিলেন এবং সেজন্য চীনে আফিম রফতানির তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছিলেন। অপরদিকে এ সিদ্ধান্তের পক্ষেও অনেকে ছিলেন যেমন- ফ্রাঙ্কলিন ডিলানো রুজভেন্টের পিতামহ ওয়ারেন ডিলানোর মতো মানুষরা, যাদের এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি ও প্রচুর লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল।

● আফিম যুদ্ধ 

কিং সরকার এক পর্যায়ে অনুধাবন করল, দেশে আফিম আমদানি নিষিদ্ধ করেও কোনোও লাভই হচ্ছে না, কারণ ব্রিটিশ বণিকরা চোরাকারবারির মাধ্যমে চীনে আফিম প্রবেশ করাচ্ছে। তাই কিং সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৮৩৯ সালে চীনা অফিসিয়ালরা ২০ হাজার বস্তা আফিম ধ্বংস করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ব্রিটেন। চীনে তাদের অবৈধ আফিমের ব্যবসা অব্যহত রাখতে তারা যুদ্ধ ঘোষণা করে চীনের বিরুদ্ধে। এভাবেই শুরু হয় আফিম যুদ্ধ।

প্রথম আফিম যুদ্ধ চলে ১৮৩৯ থেকে ১৮৪২ সাল পর্যন্ত। এ সময়ে ব্রিটেন চীনা মূলভূমি আক্রমণ করে এবং ১৮৪১ সালের ২৫ জানুয়ারি হংকং দ্বীপ দখল করে নেয়। যুদ্ধে হেরে যায় চীন। নানকিং চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেনের কাছে হংকং হাতছাড়া হয় তাদের। ফলস্বরূপ হংকং পরিণত হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ‘ক্রাউন কলোনি’।

● হংকং এর ইজারাদারি

নানকিং চুক্তির মাধ্যমে অবশ্য আফিম বাণিজ্য নিয়ে চলমান দ্বন্দ্বের কোনও সুরাহা হয় না। বরং কয়েক বছরের মধ্যেই তা আবারও চরম আকার ধারণ করে, যা শেষ পর্যন্ত গড়ায় দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধ পর্যন্ত। ১৮৬০ সালের ১৮ অক্টোবর পিকিং কনভেনশন স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ যুদ্ধ শেষ হয় আর দুই পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। ব্রিটেন দখল নেয় কৌলুন উপ-দ্বীপের দক্ষিণ অংশ এবং স্টোনকাটার আইল্যান্ডের।

কিন্তু ব্রিটিশ রাজের কপাল থেকে চিন্তার ভাঁজ কিছুতেই যেন সরছিল না বরং ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে তা গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। এর নেপথ্যে ছিল ব্রিটিশ হংকংয়ের মুক্ত বন্দরের নিরাপত্তা। হংকং ছিল একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যার চারদিক জুড়ে তখনও চীনের অধিকৃত অঞ্চল।

১৮৯৮ সালের ৯ জুন ব্রিটিশ সরকার চীনের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে হংকং, কৌলুন ও ‘নতুন অঞ্চলসমূহ’— কৌলুন উপ-দ্বীপের বাকি অংশ, বাউন্ডারি স্ট্রিটের উত্তরাংশ, শাম চুন নদী পর্যন্ত অঞ্চল এবং দূরবর্তী আরও ২০০টির মতো দ্বীপ ইজারা নেয়ার। হংকংয়ের ব্রিটিশ গভর্নররা পূর্ণাঙ্গ মালিকানা দাবি করলেও এবং চীন-জাপান যুদ্ধের মাধ্যমে দুর্বলতর হওয়া সত্ত্বেও, চীন কেবল ৯৯ বছরের জন্য ব্রিটেনের কাছে হংকং দ্বীপটি ইজারা দিতে সম্মত হয়।

● ব্রিটিশ রাজের সিদ্ধান্তহীনতা

বিংশ শতকের শুরুর দিকে বেশ কয়েকবার ব্রিটেন সরকার চিন্তা-ভাবনা করেছে চীনের কাছে হংকংয়ের ইজারা ফিরিয়ে দেয়ার। কারণ ইংল্যান্ডের জন্য দ্বীপটি আর গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কিন্তু ১৯৪১ সালে জাপান দখল করে নেয় হংকং। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীনের উপকারের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তিনি যেন চীনের কাছে হংকং দ্বীপটি ফিরিয়ে দেন। কিন্তু চার্চিল তাতে সম্মত হননি। বিশ্বযুদ্ধ শেষে হংকং আবার ব্রিটেনের অধীনেই চলে যায়, যদিও আমেরিকানরা ব্রিটেনের ওপর হংকং প্রশ্নে চাপ প্রয়োগ অব্যহত রাখে।

১৯৪৯ সালের মধ্যে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বাধীন পিপলস লিবারেশন আর্মি চীন দখল করে নেয়। তখন পশ্চিমা বিশ্ব ভয় পেতে শুরু করে, এবার হয়তো কমিউনিস্টরা হঠাৎ করেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা হংকংয়ের দিকে হাত বাড়াবে এসপিওনাজের উদ্দেশে, বিশেষত কোরিয়া যুদ্ধ চলাকালীন। বাস্তবিকই ১৯৬৭ সালে ‘গ্যাং অফ ফোর’ হংকংয়ে সৈন্য পাঠানোর কথা ভেবেছিল, পরে অবশ্য সে চিন্তা তারা মুলতবি রাখে।

১৯৮৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার এবং চীনা প্রধানমন্ত্রী ঝাও জিয়াং সিনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন, যেখানে ব্রিটিশরা সম্মতি প্রদান করে যে তারা কেবল নতুন অঞ্চলসমূহই চীনের কাছে ফিরিয়ে দেবে না, পাশাপাশি ইজারার সময়সীমা পূর্ণ হওয়ার পর কৌলুন ও ব্রিটিশ হংকংও ফিরিয়ে দেবে। তবে ঘোষণাপত্রে কিছু শর্তের উল্লেখ ছিল।

শর্তটি হলো- চীন হংকংকে নিয়ন্ত্রণ করবে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ অনুযায়ী, যার ফলে হংকং শহরটি পরবর্তী ৫০ বছর (১৯৯৭ এর পর থেকে) উচ্চ পর্যায়ের স্বায়ত্ত্বশাসন উপভোগ করবে, তবে ‘পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়াবলি ব্যতিরেকে’। এর মাধ্যমে হংকং পরিণত হবে একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে, যার অর্থ হলো-

১। এটির নিজস্ব আইন-কানুন থাকবে। ২। একাধিক রাজনৈতিক দল থাকবে। ৩। অধিবেশনের অধিকার ও বাক স্বাধীনতা থাকবে এবং ৪। এই বিশেষ অধিকারগুলো রক্ষার্থে তাদের একটি ‘খুদে সংবিধান’ থাকবে।

প্রাথমিক আইন মোতাবেক, এই অঞ্চলের নেতা তথা প্রধান নির্বাহী নির্বাচিত করা হবে বৈশ্বিক ভোটাধিকার পদ্ধতি অবলম্বনে, সকল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। 

● হস্তান্তর

১৯৯৭ সালের ১ জুলাই ইজারার মেয়াদ শেষ হয় এবং গ্রেট ব্রিটেন ব্রিটিশ হংকং ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার কাছে।

এখন পর্যন্ত হংকংয়ের এই রূপান্তর মোটামুটি ঝামেলা ছাড়াই হয়েছে। যদিও হংকংয়ের ওপর বেইজিং এর বৃহত্তর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় ফলে কয়েকবার ছোটখাট দ্বন্দ্ব ও বচসার সৃষ্টি হয়েছে। হংকংয়ের মানুষ চায় গণতান্ত্রিক উপায়ে বৈশ্বিক ভোটাধিকার পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করতে, কিন্তু চীন সরকার স্পষ্টতই অনিচ্ছুক হংকংকে পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে দিতে।

● সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, চলমান পরিস্থিতি ও পরিণতি

অনেকেই নিশ্চয়ই জানেন, হংকংয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলে আসছে। এই আন্দোলনটি করছে হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী জনগণ, যারা চায় তাদের নিজেদের নেতা নিজেরাই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে।

২০১৪ সালে বেইজিং থেকে বলা হয়, তারা হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী বেছে নেয়ার জন্য সরাসরি নির্বাচনের অনুমতি দেবে, কিন্তু তা কেবলই অনুমোদিত প্রার্থীদের তালিকার মধ্য থেকে। এই ঘোষণার পর হংকংয়ের গণতন্ত্রকামীরা বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসে, কারণ তারা এমন ব্যবস্থা চায়নি, তারা চেয়েছিল পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা। বিক্ষোভের ফলে সেই সময় শহরের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম বেশ কয়েক সপ্তাহ স্থগিত ছিল।

তাছাড়া হংকংয়ে এমন অনেকেও আছে যারা হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলিতে চীন সরকারের হস্তক্ষেপের পক্ষে। এ কারণে হংকং এখন প্রধান দুই ভাগে বিভক্ত—

ক. বেইজিংয়ের সমর্থক একটি ক্যাম্প, যারা চায় হংকংয়ের রাজনৈতিক কার্যক্রমে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সংশ্লিষ্টতা আরও বাড়ুক।

খ. গণতন্ত্রকামী গোষ্ঠী, যারা চায় হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন আরও মজবুত হোক, এবং তারা চীনের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে স্বকীয়তা গড়ে তুলুক।

২০৪৭ সাল পর্যন্ত চীন সরকার যৌথ ঘোষণাপত্র অনুসারে হংকংকে সিংহভাগ স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ উপভোগ করতে দিতে বাধ্য। কিন্তু এরপরই হংকংয়ের ওপর পূর্ণাঙ্গ অধিকার চলে আসবে তাদের হাতে। অনেকে অবশ্য চায়, ২০৪৭ সালের পর হংকংকে পূর্ণাঙ্গ সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা দিয়ে দেয়ার। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের ধারণা, চীন কখনই সে প্রস্তাবে রাজি হবে না। বরং ২০৪৭ সাল পরবর্তী দৃশ্যপটগুলো হতে পারে এমন—

চীন সরকার হংকংয়ের বর্তমান স্বায়ত্তশাসন ও প্রাথমিক আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে। 

 চীন বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে হংকংয়ের কিছু বিশেষ সুবিধা বহাল রাখতে পারে, আবার কিছু কেড়ে নিতে পারে;

চীন হংকংয়ের বিশেষ খেতাবটি কেড়ে নিতে পারে, ফলে তখন হংকংকে স্বায়ত্তশাসন ব্যতীত চীনের সাধারণ একটি প্রদেশে পরিণত হতে হবে।

২০৪৭ সালের পর কী হবে, তা আসলে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। তবে হংকংয়ের তরুণ প্রজন্মের মাঝে রাজনীতি সচেতনতার বীজ এত গভীরভাবে বুনে দেয়া হয়েছে, ২০৪৭ সালের পর চীন সরকার হংকংয়ের সাথে যা-ই করার চেষ্টা করুক না কেন, হংকংয়ের জনগণের পক্ষ থেকে তার প্রবল বিরোধিতা আসতে বাধ্য। সুতরাং এই শতকের মাঝামাঝি পর্যায়ে গিয়ে বিশ্ব রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে নতুন অধ্যায় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে চীন-হংকং দ্বৈরথ।

এসকে/এসএমএম

আরও পড়ুন